• রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:১০ অপরাহ্ন
Headline
গফরগাঁও ৩১ দফা বাস্তবায়নে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে, এডভোকেট আলফাত্মা খানের নির্দেশনা। গফরগাঁওয়ে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে সমাবেশ গফরগাঁও রাওনা মুশফিকুর রহমানের নির্দেশে মতবিনিময় ও আলোচনা সভা। ভালুকা বিরুনিয়া ইউনিয়নে ফখরুদ্দিন আহমেদ বাচ্চু গণসমাবেশ ও লিফলেট বিতরণ করেছেন। পাগলা থানা দত্তের বাজার ইউনিয়নে উঠান বৈঠক গফরগাঁওয়ে পাঁচ ভাগ মোড়ে এডভোকেট আল ফাত্তাহ্ খানের নির্দেশে উঠান বৈঠক করা হয়েছে। মাওনা চৌরাস্তা যুবদলের ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হয়েছে। মাওনা ইউনিয়নের বিএনপির আয়োজনে নতুন সদস্য ফরম সংগ্রহ ও পুরাতন সদস্য নবায়ন। গফরগাঁওয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে গাছ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। পাগলা থানায় ছাত্রবন্ধু যুব উন্নয়ন ক্রিকেট টুর্নামেন্ট খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শ্রীপুরে দিন মজুর সংকটে ঘুম নেই কৃষকের দু”চোখে

Reporter Name / ১৬৫ Time View
Update : বুধবার, ২ মে, ২০১৮

গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার বাউনি গ্রামের কৃষক হামিদুল হক, নিজের কোন জায়গা জমি নেই, প্রতিবারের মত স্থানীয় একজনের আড়াই বিঘা জমি বর্গা নিয়ে বোরো ধানের চাষ করেছেন। এই জমি চাষ করতে তাঁর সতের হাজার টাকা ঋণ করতে হয়েছে। প্রথমে নেক ব্লাস্টের আক্রমনে তাঁর ধানের চরম ক্ষতি হয় এতে জমির অর্ধেক ধান নষ্ট হয়ে গেলেও বাকি অর্ধেক ধান পেকেছে দশ দিন হল, এখনও ধান ঘরে তুলতে পারেননি তিনি, কারন ধান কাটার কামলা(শ্রমিক) পাচ্ছেন না। একদিকে ঋণের ভার অপরদিকে কালবৈশাখী ও শিলা বৃষ্টির আশংকা এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে র্নিঘুম রাত কাটছে তাঁর।
এরকম অবস্থা শুধু কৃষক হামিদুলের নয় গাজীপুরের শ্রীপুরের কয়েকহাজার কৃষকের দু”চোখ এখন র্নিঘুম। শুধু শ্রমিক সংকটের কারনেই অনাগত ফসল ঘরে তোলার অপেক্ষার প্রহর বাড়াচ্ছে। আবার অনেক এলাকায় অনেক কৃষক শ্রমিকের জোগাড় না পেয়ে নিজেদের পরিবার পরিজন নিয়ে মাঠে নেমেছেন ফসল ঘরে তোলার জন্য।
স্থানীয় কৃষি অফিস ও কৃষকদের তথ্য মতে, চলতি বোরো মৌসুমে শ্রীপুরের একটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়নে ১২১৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধানের ভাল ফলণ হলেও শেষ মুহুর্তের নেক ব্লাস্টের আক্রমনে ফলণ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে সঠিক সময়ে ধান ঘরে তুলতে পারলে সে ক্ষতি অনেকটা পুষিয়ে নিতে পারবে কৃষকরা। ধান পেকে আট দশদিন হয়ে গেলেও এখনও অধিকাংশ ধান মাঠেই রয়েছে শ্রমিক সংকটের কারনে।
গোদারচালা গ্রামের কৃষক মেহেদী হাসান জানান, তাঁর সাড়ে তিন বিঘা জমির ধান গত এক সপ্তাহ আগে পেকেছে। এখনও শ্রমিক সংকটে তিনি ধান কাটা শুরু করতে পারেননি। তিনি প্রতি বিঘা জমির জন্য চারহাজার টাকা করেও শ্রমিক পাচ্ছেন না।
তেলিহাটি গ্রামের কৃষানী উম্মে কুলসুম জানান, এক বিঘা (৩৫ শতাংশ) জমির ধান কাটতে চার পাঁচ হাজার টাকা লাগছে, এই টাকা জোগাড় করতে পারেননি বিধায় এখনও ধান কাটতে পারেননি। এ নিয়ে তাঁদের চোখে মুখে শুধুই অন্ধকার।
দড়িখোঁজেখানী গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান,আমাদের কৃষকদের এখন পদে পদে বাঁধা। সবচেয়ে বড় সমস্যা এখন কৃষি শ্রমিক সংকট। আর এবার মরার উপর খাড়ার ঘাঁ হিসেবে এসেছে শ্রমিক সংকট।
পৌর এলাকার কেওয়া গ্রামের কৃষক আজমল মিয়া জানান, দেশে শিল্প কারখানা গড়ে উঠার পর থেকেই কৃষি শ্রমিকের সংকট শুরু হয়েছে। যা এখন চরমে পৌছেছে। ভালো ফলন হলেও কৃষি উৎপাদনে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হওয়ায় কৃষকরা লোকশানে রয়েছে। নিজের জমির ধান কাটতে কয়েকদিন ধরে হন্যে হয়ে তিনি শ্রমিক খোঁজেও ব্যর্থ হচ্ছেন।
শ্রীপুরের সবচেয়ে বড় কৃষি শ্রমিকের হাট বসে মাওনা চৌরাস্তায় সবসময় শ্রমিক থাকলেও গত ১৫ দিন ধরে এখানে শ্রমিক শূন্য। বিভিন্ন জায়গা হতে শ্রমিক নিতে আসা লোকজনের ভীর প্রতিনিয়ত বাড়ছে এ হাটে। কিন্তু শ্রমিক না পেয়ে শূণ্যেই ফিরতে হয় কৃষকদের।
নিজমাওনা গ্রামের সত্তুরোর্ধ কৃষক আহমদ আলী তিনদিন ধরে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে ধান কাটছেন কথা হয় তাঁর সাথে, তিনি জানান জমিতে পাকা ধান রেখে দু”চোখে ঘুম হয় না। যে কোন সময় সোনালী ফসলের হানী হতে পারে, তাই শ্রমিক সংকটের কারনে তিনি বসে থাকতে নারাজ অসুস্থ শরীর নিয়েও স্ত্রীকে নিয়ে ধান কাটার জন্য মাঠে নেমেছেন।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মুয়ীদ উল হাসানের অভিমত, বর্তমান শ্রম বাজারে কৃষি শ্রমিক সংকট এখন অন্যতম একটি সমস্যা। এ সংকট মোকাবেলায় কৃষকদের কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার বাড়ানোর পরামর্শ তাঁর। এছাড়াও বোরো মৌসুমের ফসল ঘরে তোলার সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এখন পর্যন্ত শ্রীপুরে দুর্যোগের কবলে কৃষকরা পড়েনি। তবে এ বিষয়ে অতিসতর্কতার অংশ হিসেবেই ধান পেকে গেলেই যত দ্রুত সম্ভব ঘরে তোলার পরামর্শ দেন তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :
More News Of This Category